বিহারী মুসলিম মহম্মদ শানোয়াজ প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছিলো লেক টাউন থানা এলাকার ১৫ বছরের স্কুল ছাত্রী বাঙালী হিন্দু মেয়েকে। বয়স ১৮ হওয়া মাত্রই নিখোঁজ হয় মেয়েটি। ২০১৮ র ৩ ডিসেম্বর শানোয়াজের সাথে পালিয়ে যায় ওদের গয়ার বাড়ীতে। ওখান থেকে ফোন করে বাড়ীতে খবর দেয় যে সে শানোয়াজকে বিয়ে করবে। ৪ ডিসেম্বর ওখানকার কোর্টে মেয়েটি জানায় যে সে স্বেচ্ছায় মুসলমান হচ্ছে। নাম হবে সাজিয়া নাজ। ইসলাম ধর্ম তার কাছে সঠিক বলে মনে হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর তাকে কলকাতায় আনা হয়। টিপু সুলতান মসজিদে আরেক প্রস্থ ডিক্লেয়ারেশন হয় এবং মুসলিম ধর্ম অনুযায়ী বিয়ে হয়। আবার ফিরে যায় গয়াতে। মেয়েটি সন্তানসম্ভবা থাকা কালীন সময়েই শানোয়াজ কুয়েত চলে যায়। মেয়েটির একটি কন্যা সন্তান হয়। নাম রাখা হয় আমিনা। কয়েকদিন পর একটা বাংলায় লেখা চিঠি ওই বাড়ীতে আসে। একজন বাংলাদেশের মেয়ে (শানোয়াজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে) চিঠিতে শানোয়াজকে লিখে পাঠিয়েছে যে তাকে ছাড়ার সময় তিন লাখ টাকা দেবার কথা ছিলো। সেটা এখনো কেন দেওয়া হয় নি? চিঠি পড়ে এই মেয়েটির তো মাথায় হাত। আরেকটি বৌ ও আছে। সে বিষয়টি ফোনে শানোয়াজের কাছে জানতে চাইলে ওখান থেকে উত্তর আসে যে তারা মুসলমান। চারটে বিয়ে করতে পারে। হিন্দু থেকে মুসলমান হওয়া মেয়েটি বুঝতে শুরু করেছে কি মারাত্মক ভুল সে জীবনে করে ফেলেছে। শানোয়াজের মা, বোনরাও তাকে বলে যে এখানে সবারই তিনটে চারটে করে বৌ আছে। মুসলমানদের তিন চারটে বৌ এর নিজেদের মধ্যে কোন সমস্যা নেই।
মেয়েটি বিষয়টিকে মানতে চায় না। মার খেয়েও না। এবার শানোয়াজের মা কলকাতার সল্টলেক দত্তাবাদে তার বড়ো মেয়ের কাছে মেয়েটিকে নিয়ে এসে রেখে যায়। এখানেও অর্থাৎ বড়ো ননদের বাড়ীতেও সেই মেয়েটির অবস্থা একইরকম থেকে যায়।
এরমধ্যে করোনা যোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানাতে প্রধানমন্ত্রী একদিন সন্ধ্যায় ইলেকট্রিক আলো কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রেখে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের আহ্বান জানান। মেয়েটিও প্রদীপ জ্বালায়। এতে শ্বশুরবাড়ীর পুরো পরিবার ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে শানোয়াজ কুয়েত থেকে নির্দেশ পাঠায় তার ভাগ্নী যেন তার বৌকে কষিয়ে চড় মারে আর সেই চড় মারার ভিডিও যেন তাকে পাঠানো হয়। সেই অনুযায়ী কাজ হয়। এবার রীতিমত বিদ্রোহ করে মেয়েটি। তার মা বাবাকে ফোন করে কাকুতি মিনতি করে তাকে নিয়ে যাবার জন্য। মা বাবা এসে মেয়েকে নিয়ে যায়। মেয়েটির ননদ,তার স্বামী এবং প্রতিবেশী কয়েকজন মুসলমান এসে মেয়ের বাড়ীতে হুমকি দিতে শুরু করে মেয়েকে ফিরিয়ে দেবার জন্যে। মেয়ের বাবা, মা ও কয়েকজন হিন্দু প্রতিবেশী রুখে দাঁড়ায়। ওরা ফিরে যায়। শাসিয়ে যায় যে শানোয়াজ ফিরলে তারা জোর করে ওকে নিয়ে যাবে। কারো ক্ষমতা নেই আটকায়। মেয়ের মা বাবা বহু সন্ধানের পর বুঝতে পারেন গোড়া মুসলিমদের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে একমাত্র #হিন্দু_সংহতি পাশে থাকবে। তাদের কাছে যেতে হবে। যোগাযোগ করেন হিন্দু সংহতির সহ সভাপতি আইনজীবি শান্তনু সিংহের সাথে। শান্তনু সিংহ আশ্বাস দিলেন নিরাপত্তার।
এবার শানোয়াজ কুয়েত থেকে ফিরে আসলো। সবাই মিলে দিনের পর দিন হামলা মেয়ের বাড়ীতে। শান্তনু বাবু চেম্বার থেকে ডিকটেশন দিয়ে দিয়ে লেক টাউন থানায় পরপর থানায় অভিযোগ জমা করাতে থাকেন। পুলিশ যথারীতি নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে যায়।
এপ্রিল মাসের শেষ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেয়ের মা করুণ স্বরে ফোন করে জানান # শানোয়াজ তার আত্মীয়-স্বজন নিয়ে দরজা ভেঙে বাড়ীতে ঢুকে মেয়ের ও মেয়ের মাকেও মেরেছে। এবার ক্রুদ্ধ শান্তনু সিংহ থানায় ফোন করে জানান যে পুলিশ যদি ব্যবস্থা না নেয় তবে সেই বৃহষ্পতিবার তিনি কোর্টে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। কাঠগড়ায় পুলিশকে তুলে বোঝাবেন তার দৌড় কতটা। কাজ হল বিদ্যুতের বেগে। পুলিশ শানোয়াজকে গ্ৰেপ্তার করে। ৩০৭ ধারায় কেস দেয়। এবার শুরু হয় ওই পক্ষের আতঙ্ক। বারংবার শান্তনু বাবুর কাছে ফোনে অনুরোধ আসে মামলা তুলে নেবার জন্যে। কিন্তু হিন্দু সংহতি অন্য ধাতুতে গড়া। বুধবার দিন শান্তনু সিংহের বিশেষ কাজে আমতায় যাবার কথা। মামলার ভার দেন বিধাননগর কোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবি গোরা সরকারের উপর। বলে দেন কোন অবস্থাতেই যেন জামিন না পায়।মেয়ের মা বাবাকেও উঠিয়ে এনেছিলো শানোয়াজের পরিবার ও দলবল। শান্তনু সিংহ ফোনে নির্দেশ দিয়ে বাড়ী পাঠিয়ে দেন তাদের। প্রবল চাপ থাকা সত্ত্বেও শেষ হাসি হাসেন গোরা বাবু। জামিন নাকচ হয় শানোয়াজের। সিজ হয় তার পাশপোর্ট। বুঝে যায় যে সব জায়গায় ডাল গলে না।আগেই শান্তনু বাবু বিধাননগর কোর্টে ডিভোর্স স্যুট (মুসলমানদের ক্ষেত্রে টাইটেল স্যুট ইসলামের দৃষ্টিতে স্ত্রী হল স্বামীর প্রপার্টি) মামলা করে রেখেছিলেন।
পরে শুক্রবার দিন মেয়েকে নিয়ে কোর্টে যান শান্তনু সিংহ। মেয়ের সম্মতি ক্রমে শাহনাজের জামিন হয় । শানোয়াজরা শান্তনু বাবুর কাছে কাকুতি মিনতি করতে শুরু করে। বলে, আপনি যা বলবেন তাই করবো। আপনি চাইলে আমি হিন্দু হয়ে যাবো। আপনি আমার উপর থেকে কেস তুলে নেন। কিন্তু শান্তনু সিংহ রাজি হননি। জাত শিক্ষা না দিয়ে তিনি ছাড়বেন না।
শানোয়াজ টাইটেল স্যুট তার জবাব দেয় । গত শুক্রবার, ১৯/১২/২১, মাননীয় আদালত দুপক্ষের পিটিশন এবং সওয়াল জবাব শুনে বিবাহ বিচ্ছেদের আদেশ । ওই হিন্দু থেকে মুসলমান হওয়া মেয়েটি নতুন জীবন ফিরে পায়। জানায় আবার সে হিন্দু নারী হিসেবে সমাজে নিজের পরিচয় দেবে। মেয়ের গোটা পরিবার অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানায় হিন্দু সংহতি ও তার সহ সভাপতি আইনজীবি শান্তনু সিংহ ও তার সহযোগীদের।