
২৬/১১ কে মনে আছে? ভারতবর্ষের গণতন্ত্রের এক অভিশপ্ত দিন। ১০ ইসলামিক জঙ্গি ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বাণিজ্য নগরী মুম্বাইয়ে আলাদা আলাদা ৯ জায়গায় হামলা করে।এক রাতেই শেষ করে দেয় শত শত তরতাজা প্রাণ।
সেইদিনের সেই ২৬/১১ আবার ফিরলো এবার ফিরলো ২/১১ হয়ে। সেইদিনের অভিশপ্ত রাত ছিল ভারতের মুম্বাইয়ের এবার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার। ঠিক একই পদ্ধতিতে সেই ইসলামিক জঙ্গীরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় এক সাথে হামলা করলো।খবরের সূত্র অনুযায়ী এইদিন স্থানীয় সময় রাত ৮ টা নাগাদ ভিয়েনার ৬টি ভিন্ন জায়গায় এক সাথে হামলা চালায় জঙ্গী রা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে শহরের প্রাণকেন্দ্র একটি সিনাগগে ঢুকে প্রথম তারা এলোপাথারি গুলি চালাতে শুরু করে। সেখানে তৎক্ষণাৎ প্রাণ যায় ৭ জন সাধারণ নাগরিকের, আহত শতাধিক। জঙ্গী রা ৫০ রাউন্ড মতো গুলি চালিয়েছে। বেশ দীর্ঘক্ষণ ধরে পুলিশ ও জঙ্গী দের মধ্যে গুলির লড়াই চলতে থাকে। পুলিশের গুলিতে এক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। এই জঙ্গীর শরীরে বিস্ফোরক বাধা ছিল। হয়তো আরো কোনো বড়ো আক্রমণের পরিকল্পনা ছিল ,স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে।
একদিকে যখন ইহুদীদের উপাসনালয়ে আক্রমণ হচ্ছে অন্যদিকে তখন শহরের ফার্স্ট ডিস্ট্রিক্ট থেকেও হামলার খবর আসতে থাকে। অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ল নেহেমার সংবাদ মাধ্যম কে জানিয়েছেন, পুলিস পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে। সেনাকেও ডাকা হচ্ছে। এখনও প্রর্যন্ত একজন হামলাকারীকে গুলি করে মেরেছে পুলিস, একজন এখনও পলাতক। মাস্ক পরিহিত যে ব্যক্তিকে জঙ্গি সন্দেহে পুলিস গুলি করে মারে তার সঙ্গে আইএস-এর যোগ থাকতে পারে।বেশ কয়েকজনকে তারা পণবন্দি করেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন অস্ট্রিয়ার ইতিহাসে এটি একটি কঠিন দিন। বহুদিন এই ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা অস্ট্রিয়াকে করতে হয়নি।
ভিয়েনার ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রেসিডেন্ট অস্কার ডয়েস জানিয়েছেন, বোঝা যাচ্ছে না, ইহুদি উপাসনালয়কেই জঙ্গিরা টার্গেট করেছিল কিনা। তবে একটি সিনেগগের সামনেই প্রথম হামলা হয়।
শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও । এক টুইটে তিনি লিখেছেন, জঙ্গি হামলার ওই ঘটনায় আমি শোকস্তব্ধ। এই কঠিন সময়ে ভারত অস্ট্রিয়ার পাশে রয়েছে। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইলো।
বর্তমানে গোটা শহরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সাধারণ মানুষকে ঘর থেকে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছে ভিয়েনা পুলিশ। গণ পরিবহণ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনো পাওয়া যায় নি।
একদিকে যখন ইসলামিক জঙ্গী বাদে গোটা ইউরোপ তটস্থ ঠিক তখন অন্যদিকে অন্যদিকে ভারতীয় উপমহাদেশের বাংলাদেশে সেই জঙ্গীবাদ কে সমর্থন করে হাজারে হাজারে মুসলমান রাস্তায় মিছিল করছে। এইদিন অর্থাৎ সোমবার বাংলাদেশের শীর্ষ মৌলবাদী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সেক্রেটারি জুনায়েদ বাবুবনগরি ঢাকার গুলশানের বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে থেকে উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন ” আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি এখানে থেমে থাকবে না। আমাদের দাবি না মানা হলে আমরা ফরাসি দূতাবাসে যাব এবং সেটি ধ্বংস করব,” তিনি আরো বলেন ” হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে হলে ইসলামের মৌলিক নির্দেশনাগুলো মানতে হবে। হেফাজতের দাবিগুলো মানতে হবে।ভাস্কর্য্যের নামে যেসব মুর্তি তৈরি করা হয়েছে তা সরিয়ে ফেলতে হবে। “
একদিকে ইসলামিক মৌলবাদ অন্যদিকে সভ্য সমাজ। এক নতুন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব।
