
আশঙ্কা টা ছিলই, এবার তা ধীরে ধীরে বাস্তবের রূপ নিতে শুরু করলো। দিনে এনে দিনে খাওয়া যে প্রান্তিক গরিব মানুষ গুলো দুটো রোজগারের আশায় প্রতিদিন বিভিন্ন মফঃস্বল ও গ্রাম থেকে কলকাতায় ছুটে আসতো তাদের জীবনের প্রাণ কেন্দ্রই ছিল লোকাল ট্রেন। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষকে সঠিক সময়ে তার গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে তাদের জীবন কে সচল রেখেছিলো যে লোকাল ট্রেন তা আজ নিজে নিশ্চল। দীর্ঘ ৭ মাস ধরে সপূর্ণ রূপে বন্ধ লোকাল ট্রেন আর সেই সঙ্গে বন্ধ প্রান্তিক গরীব মানুষ গুলোর রুজি রোজগারও। স্বাভাবিক ভাবেই মানুষের মনে ক্ষোভ টা জন্মেছিলোই , এবার ধীরে ধীরে তার বহিঃপ্রকাশ হওয়া শুরু হলো।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার সন্ধ্যায় হাওড়া ষ্টেশনে স্পেশাল ট্রেনে উঠতে চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন সাধারণ যাত্রী রা। এইদিন সন্ধে ৬টা নাগাদ। হাওড়া স্টেশনের ক্যাব ওয়েব দিকের গেটের সামনে জড়ো হন কয়েক হাজার যাত্রী। স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে উঠতে দিতে হবে এই দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ।স্টেশনে ঢোকার মুখেই আটকে দেওয়া হয় যাত্রীদের। বন্ধ করে দেওয়া হয় গেট। জোর করে স্টেশনে ঢুকতে গেলে জিআরপি ও আরপিএফ এর সঙ্গে বচসা বেধে যায় যাত্রীদের।এরপরই শুরু হয় লাঠিচার্জ। রেয়াত করা হয়নি মহিলাদেরও অভিযোগ যাত্রীদের। লাঠির ঘায়ে এবং হুড়োহুড়িতে পড়ে গিয়ে আহত হন বেশ কয়েকজন যাত্রী।ঘটনার পরই ছুটে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। বন্ধ করে দেওয়া হয় সব গেট। ফলে বিপাকে পড়েন দূরপাল্লার ট্রেন ধরতে আসা যাত্রীরা।যদিও পুলিশের তরফ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে, পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক অমিতাভ চট্টোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যম কে জানান, লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য কোনো সঠিক তথ্য তাদের কাছে এখনো আসেনি। আর স্পেশ্যাল ট্রেন শুধুমাত্র রেলকর্মীদের জন্য। সেখানে সাধারণ যাত্রীদের ওঠার অনুমতি নেই।
রেল কর্তৃপক্ষ সংবাদ মাধ্যম কে জানিয়েছে,লোকাল ট্রেন চালাতে তারা তৈরি। অনুমতি চেয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিশেষ সূত্রে জানা যাচ্ছে যে সেই চিঠির উত্তরে ঘটনার পর পরই এইদিন স্বরাষ্ট্র দফতরের অতিরিক্ত প্রধান সচিব এইচকে দ্বিবেদী পূর্ব রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজারকে চিঠি দিয়ে জানান কোভিড বিধি মেনে সাধারণ যাত্রীদের জন্য সকাল ও দুপুরে ট্রেন চালাতে চায় রাজ্য সরকার। লোকাল ট্রেন চালাতে রেলের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চায় রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গ ক্রমে বলে রাখা প্রয়োজন সাধারণ, নিম্নবিত্ত, প্রান্তিক খেটে খাওয়া হিন্দুদের সুবিধার্থে হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনের লোকাল ট্রেন পরিসেবা অতি শীঘ্র পুনরায় চালু করার জন্য ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে হিন্দু সংহতি। তাদের দাবি রাজ্য যেনো অবিলম্বে রেল দফতরের সাথে আলোচনা করে রাজ্যে ট্রেন চলাচল শুরু করার জন্য উদ্যোগ নেয়।
ইতিপূর্বে আরো বেশ কিছু স্টেশনে স্পেশাল ট্রেনে উঠতে চেয়ে বিক্ষোভ করে সাধারণ যাত্রী রা। মাস খানেকেরও বেশি আগে চালু হয়েছে মেট্রো। রাস্তায় নেমেছে বাস-ট্যাক্সি-অটো, খুলছে শপিং মল ,থিয়েটার। বাধা নেই মিটিং মিছিলেও তাহলে লোকাল ট্রেন বন্ধ কেন ? প্রশ্ন তুলছে সাধারণ যাত্রী রা।
