
দূর্গা পূজার বিসর্জন উপলক্ষ্যে পড়লো পুলিশের লাঠি, চললো গুলি, আহত হলো ২৭ জন, প্রাণ দিলো ১৮ বছরের এক তরতাজা যুবক অনুরাগ পোদ্দার। আর এই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকলো নীতিশ কুমারের বিহার , প্রসঙ্গক্রমে যাদের জোট সঙ্গী আবার বিজেপি। বুধবার থেকে নির্বাচন শুরু বিহারে আর তার প্রথম দফার নির্বাচনের একটি স্থান মুঙ্গের আর সেখানেই ঘটলো এই মর্মান্তিক ঘটনা।
ঘটনাটি ঘটেছে দশমীর রাতে , সোশ্যাল মিডিয়ায় হওয়া একটি ভাইরাল ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে একদল মানুষ থানার সামনে একটি প্রতিমা কে ঘিরে বসে রয়েছে আর তাদের উপর কোনোরকম প্ররোচনা ছাড়াই নিৰ্বিচারে লাঠি চালাচ্ছে পুলিশ। এই ঘটনা নিয়ে বিসর্জন কমিটির সদস্য প্রকাশ ভগৎ জানান, মুঙ্গেরে ৫৩টির বেশি পুজো হয়েছে এবার। দীনদয়াল চক দিয়ে গঙ্গায় বিসর্জন করার কথা ১৫টি পুজোর। কোভিড পরিস্থিতি, তার উপরে প্রথম দফার ভোটগ্রহণও বুধবার। সে জন্য এবার মঙ্গলবার ভোর ৫ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল পুলিস।রাত ১১.৫০ নাগাদ দেরি হওয়া নিয়ে পুলিশের সঙ্গে পুজো উদ্যোক্তাদের ঝামেলা বাধে।প্রথমে বচসা,তারপর মুহূর্তের মধ্যে শুরু হয়ে যায় গণ্ডগোল পুজো উদ্যোক্তাদের উপরে নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে পুলিস। পুলিসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পুজো উদ্যোক্তারা। এরপরই পুলিসকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। রাত ১টা পর্যন্ত চলে সংঘর্ষ। বিশাল পুলিস বাহিনী পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে পুলিস। ১৫ রাউন্ড গুলিও ছুড়েছে। মৃত অনুরাগ পোদ্দারের পরিজন সাধনা পোদ্দারের অভিযোগ, মাথায় গুলি করেছে পুলিস।
অন্যদিকে মুঙ্গেরের পুলিস সুপার লিপি সিং জানিয়েছেন , ‘পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি ও পাথর ছুড়েছে জনতাই। পরিস্থিতি সামলাতে পালটা গুলি চালাতে হয় পুলিশকে। ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট ২৭ জন আহতের মধ্যে ২০ জনই পুলিশ কর্মী। তবে, পরিস্থিতি এখন আয়ত্তে।’ একজনের মৃত্যু হলেও মুঙ্গের সদর হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, মোট ৭ জনের শরীরে গুলির আঘাত রয়েছে। তাঁদের ভাগলপুরের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এইদিকে ঘটনা কে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে উত্তপ্ত হয়েছে রাজ্য রাজনীতি বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী বলেছেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, নির্বাচন কমিশন যেন এই বিষয়ে তদন্ত করে পুরো বিষয়টি দেখে।’ যদিও এলজিপি নেতা চিরাগ পাসওয়ান পালটা নীতীশ কুমার-বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে বিহারে তালিবানি শাসন চলছে। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিৎ। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের কাউকে চাকরি দেওয়ারও দাবি জানাচ্ছি।’
মুঙ্গের এর প্রথম দফার ভোট বুধবার তার আগে এই ঘটনা রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলেছে নীতিশ কুমারের জেডি (ইউ) ও জোট সঙ্গী বিজেপি কে। এই ঘটনা বিহারের রাজনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা তা জানা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।