
ইতিমধ্যে তদন্তকারী সংস্থা NIA রাজ্যের কয়েকটি জেলা থেকে ১০ জন আল-কায়দা জঙ্গী কে গ্রেফতার করেছে। তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে বলা হচ্ছে এই জঙ্গীরা রাজ্য জুড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে থাকা খারিজী মাদ্রাসার গুলোর সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। মাদ্রাসা মূলত তিন রকম সরকার দ্বারা অনুমোদিত সম্পূর্ণ সরকারি মাদ্রাসা ,সরকার অনুমোদিত আধা-সরকারি মাদ্রাসা , ও সরকার অনুমোদনহীন খারিজী মাদ্রাসা। পশ্চিমবঙ্গে মুর্শিদাবাদ ,মালদা, উত্তর দিনাজপুর, উত্তর ও দক্ষিণ দুই ২৪ পরগনার গ্রাম গুলি তে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে থাকা এই খারিজী মাদ্রাসার সংখ্যা ৫৫০০ র ও অধিক।
শামীম আনসারী,ডাক নাম মুন্না ধৃত আল-কায়দা জঙ্গীদের অন্যতম ও কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী আল-মামুন এর ঘনিষ্ট যার উপর ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। NIA সূত্র অনুযায়ী রাজ্যের বিভিন্ন খারিজী মাদ্রাসার সাথে যুক্ত ছিল এই শামীম আনসারী। যার মূল দ্বায়িত্ব ছিল বাংলার এই খারিজী মাদ্রাসা গুলো কে জঙ্গী তৈরীর আঁতুরঘর বা কারখানায় পরিণত করা। যে কাজে সে নিপুণ ভাবে দক্ষতার সাথে এগোচ্ছিলো , মাদ্রাসা গুলি তে আল-কায়দার ফান্ডিং পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে , মাদ্রাসা পড়ুয়া দের অস্ত্র শিক্ষা ও ধর্মীয় মৌলবাদের শিক্ষার দ্বারা তাদের কে রাষ্ট্র বিরোধী করে তোলা এইসবই ছিল মাদ্রাসা শিক্ষার আড়ালে এই শামীম আনসারী দের মূল লক্ষ্য। ১০-২০ বৎসর বয়সী ছাত্রদের ইসলামিক ধর্মগ্রন্থের কট্টর মৌলবাদের শিক্ষার দ্বারা তাদের মধ্যে ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন তৈরী ও পরবর্তী তে তাদের কে স্লীপার সেল হিসাবে ব্যবহার করে সন্ত্রাসবাদী জেহাদী তৈরী করাই এই মাদ্রাসা গুলির একমাত্র লক্ষ্য।
২০১৭ সালের উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাট দাঙ্গার সময় এই মাদ্রাসা গুলির ভূমিকা ও তাদের কার্যকলাপ প্রকাশ্যে চলে আসে। দেখে দেখে হিন্দু বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া , হিন্দু দোকান লুটপাঠ করে ভেঙ্গে দেওয়া, হিন্দু দেরকে খুঁজে খুঁজে হত্যা করার মাধম্যে ইসলামের কট্টর হিংস্র রূপ সবার সামনে প্রকাশ পায়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ এই দাঙ্গার জন্য বহিরাগত দের সন্দেহ করলেও গোয়েন্দা দের তদন্তে উঠে আসে বসিরহাট,বাদুড়িয়ার বিভিন্ন খারিজী মাদ্রাসা যোগ, যার সূত্র ধরে গোয়েন্দারা পরবর্তীতে সন্ধান পায় মাদ্রাসার আড়ালে হতে থাকা জঙ্গী প্রশিক্ষণ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক উচ্চ পদস্থ অফিসারের বক্তব্য অনুযায়ী রাজ্যজুড়ে প্রায় ৬০০০ মাদ্রাসার ৫০০ র কিছু মাদ্রাসা সরকার অনুমোদিত , ৯০ শতাংশের বেশি মাদ্রাসার কোনোরকম অনুমোদন নেই। তার থেকেও বড়ো বিষয় মাদ্রাসা গুলোর ওপর সরকারের কোনোরকম আধিপত্য বা ক্ষমতা নেই। যার ফলে ভারত-বাংলাদেশ বর্ডার এর ২২০০ কি.মি বর্ডার যা পশ্চিমবঙ্গের উপর বিস্তারিত তার বেশিরভাগ বর্ডার এর ধার ধরে এই মাদ্রাসা গুলি গড়ে উঠেছে। মাদ্রাসা গুলি বর্ডারের গরু পাচার , বাংলাদেশ জঙ্গী যোগ ও সন্ত্রাসবাদী জেহাদী তৈরির আঁতুরঘর হিসাবে কাজ করে চলেছে।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে এই তথ্য থাকা সত্ত্বেও কেন এই মাদ্রাসা গুলি বন্ধ করার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না ? কিসের স্বার্থে?