গতকাল ১৫ই সেপ্টেম্বর, রবিবার হিন্দু সংহতির উদ্যোগে উত্তর কোলকাতার কৈলাস বোস স্ট্রীটে মনিশিখা ট্রাস্ট হলে অনুষ্ঠিত হল N R C এবং নাগরিকত্ব বিল নিয়ে বিশেষ কর্মশালা।
শতাধিক বিশিষ্ট নাগরিকের উপস্থিতিতে দুটি বিষয়ের উপরেই বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং এ বিষয়ে করনীয় কি সেটার উপর আলোকপাত করা হয়। বক্তা ও শ্রোতাদের মধ্যে বিষয়বস্তুর বিভিন্ন দিক নিয়ে তথ্য, দৃষ্টিভঙ্গী ও অভিজ্ঞতার আদান প্রদান হয়। হিন্দু সংহতি দাবি রাখছে যে আগে নাগরিকত্ব বিলের মাধ্যমে বাঙালি হিন্দুকে আইনি রক্ষাকবচ দিতে হবে। তারপর এন আর সি চালু করতে হবে। এন আর সি চালু না হলে এই পশ্চিমবাংলা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলায় পরিণত হবে। বিভিন্ন জেলা এবং ব্লক স্তরেও এই ধরনের ওয়ার্কশপ হিন্দু সংহতি আয়োজন করবে। N R C এবং নাগরিকত্বের আইনগত দিকটি আলোচনা করেন প্রখ্যাত আইনজীবি এবং সংবিধান সম্পর্কিত বিষয়ে স্বনামখ্যাত ব্যক্তিত্ত্ব সৈকত বসু। সভায় রজত রায়, সঞ্জয় সোম, দীপ্তাশ্য যশ এবং সুমন্ত্র মাইতিও এই বিষয়ের বিভিন্ন খুটিনাটি দিকের উপর আলোকপাত করেন।
আলোচনায় যে বিষয়গুলি উঠে আসে, সেগুলি হল –
১) আসামে এনআরসি- র উদ্দেশ্য সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। এতে অবৈধ মুসলিম অনুপ্রবেশকারীরা ভারতের বৈধ নাগরিকত্ব পেয়ে গেছে। পাশাপাশি বিরাট সংখ্যক হিন্দু বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।
২) সারা ভারতে কেন্দ্র সরকারের নোটিফিকেশন গেজেট প্রযোজ্য হলেও আসামে তা কার্যকর হয়নি। ফলে হিন্দু শরণার্থীরা এই নোটিফিকেশনের সুরক্ষা পায় নি।
৩) আসামে এই নোটিফিকেশন লাগু করে হিন্দুদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সংহতি সুপ্রিম কোর্টে মামলা করবে এবং এনআরসি ছুট হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আন্দোলনে নামবে।
৪) প্রথমে নাগরিকত্ব বিল পাশ না করিয়ে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি করতে দেওয়া যাবে না।
৫) পশ্চিমবঙ্গে ১৯৫১ সালকে কাট অফ ইয়ার ধরে এনআরসি করতে হবে।
৬) ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের আগে যে হিন্দুরা ধর্মীয় আগ্রাসনের শিকার হয়ে অথবা ভয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছে, তাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে।
৭) ২০১৪ র ৩১ শে ডিসেম্বরের পরে যে হিন্দুরা ওই একই কারণে ভারতে এসেছেন বা আসবেন, তাদেরও ভারতে থাকার আইন সম্মত পথ নির্ধারণ করতে হবে।
এই দাবি নিয়ে হিন্দু সংহতি আন্দোলনে নামছে।