গতকাল ২০শে জুন, পশ্চিমবঙ্গ দিবসে হিন্দু সংহতি আয়োজিত মিছিলে হাজার হাজার যুবক পা মেলালেন। বাঙালি হিন্দুর শেষ আশ্রয়স্থল পশ্চিমবঙ্গ রক্ষায় মিছিল থেকে ওঠা স্লোগানে কেঁপে উঠলো কলকাতার রাজপথ। মিছিলে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার যুবক-যুবতী অংশ নেয়। হাজার হাজার মানুষের মিছিল আমহার্স্ট স্ট্রিটের শ্রদ্ধানন্দ পার্কের সামনে থেকে শুরু হয়ে এমজি রোড, বিধান সরণি হয়ে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে শেষ হয়। প্রায় ৪ কিলোমিটার লম্বা মিছিল থেকে যুবকেরা পশ্চিমবঙ্গ রক্ষায় স্লোগান তোলেন-”পশ্চিমবঙ্গ আমার মা, জিহাদিস্থান হবে না”, ”পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ হতে দিচ্ছি না, দেব না। এই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন হিন্দু সংহতির সভাপতি শ্রী দেবতনু ভট্টাচার্য, পূজ্যপাদ স্বামী প্রদীপ্তানন্দজী মহারাজ, স্বামী আগমানন্দজী মহারাজ, হিন্দু সংহতির উপদেষ্টা শ্রী চিত্তরঞ্জন দে, সহ সভাপতি শ্রী শান্তনু সিংহ ও সমীর গুহরায় ও দেব চট্টোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায় , সম্পাদক শ্রী সুন্দর গোপাল দাস, রাজ্য কমিটির সদস্য শ্রী রজত রায় ও দীনবন্ধু ঘরামী, সহ সম্পাদক শ্রী সুজিত মাইতি, কোষাধক্ষ্য শ্রী সাগর হালদার । শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন হিন্দু সংহতির নেতৃবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত বক্তারা। প্রথমে আশীর্বানী দেন পূজ্যপাদ স্বামী প্রদীপ্তানন্দজী মহারাজ। তিনি তার বক্তব্যে যুবকদেরকে বাঙালি হিন্দুর শেষ আশ্রয়স্থল পশ্চিমবঙ্গ বনাচানোর লড়াইয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন হিন্দু থাকলে রাজ্যের সংস্কৃতি, ধর্মনিরপেক্ষতা , রাজীনীতি থাকবে। এরপর বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক শ্রী রন্তিদেব সেনগুপ্ত। তিনি তাঁর বক্তব্যে, বাঙালি হিন্দুর হোমল্যান্ড হিসেবে পাকিস্তানের বুক চিরে এই পশ্চিমবঙ্গের সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও এই রাজ্যের বিভিন্নপ্রান্তে হিন্দুরা জিহাদি আক্রমণের শিকার হয়েছে। তিনি তাঁর বক্তব্যে ধুলাগড়, নলিয়াখালী, বসিরহাট-বাদুড়িয়া, বগাখালীর কথা তুলে ধরেন। এরপর বক্তব্য রাখেন হিন্দু সংহতির সভাপতি শ্রী দেবতনু ভট্টাচার্য। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাঙালি হিন্দুর স্বার্থে হিন্দু সংহতির দীর্ঘ আন্দোলনের কথা তুলে ধরেন এবং সেইসঙ্গে কয়েকটি দাবির কথা জানান। বাংলাদেশ থেকে আগত সমস্ত হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেবার দাবি, সকলের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার বাধ্যতামূলক করার দাবি, বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের ভারত থেকে চিহ্নিত করে তাদের বিতরণ করার দাবি এবং শিয়ালদহ স্টেশনের নাম ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি টার্মিনাস করার দাবি জানান। এরপর তিনি উপস্থিত জনতার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন -আপনারা এই দাবি সমর্থন করেন কিনা। উপস্থিত হাজার হাজার মানুষজন হাত তুলে সমস্বরে এই দাবিগুলিকে সমর্থন জানান। এরপর তিনি হিন্দু যুবকদেরকে বাংলার গ্রামে গ্রামে জিহাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অভেদ্য দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ দিবসের এই মিছিলে কলকাতার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন বিশিষ্ট মনুষরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন শ্রী সঞ্জয় সোম,সাহিত্যিক মোহিত রায়, রাজবংশী কল্যাণ সমিতির প্রমুখ রাজেশ মন্ডল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রবীণ প্রচারক কেশব রাও দীক্ষিত এবং গজানন বাপট, কলকাতার সালাসার ভক্তবৃন্দ-এর সভাপতি শ্রী বীরেন্দ্র মোদী প্রমুখ।