শিবা সোরেন – দক্ষিণ দিনাজপুরের পতিরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র। সে তাঁর পরিবারের প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। ছোটবেলায় তাঁর বাবা মারা গিয়েছিলো। তার পর থেকে খুব কষ্ট করেই সে পড়াশুনো করছে।সে বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করার স্বপ্ন দেখে। শুভজিৎ হাঁসদা একই জেলার সুদর্শনগর P. H. H. B. উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর। তার পিতা সামান্য কিছু জমিতে কৃষিকাজ করে সংসার চালান। অভাবের পরিবারে শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে শুভজিৎ। সে বড়ো হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। বালুরঘাটের রীমা মান্ডি। সে কুরমাইল সোনাওয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। সেও তার পরিবারের প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। তার কৃষক পিতার সামর্থ নেই তাঁর হাতে প্রয়োজনীয় বই তুলে দেওয়ার। বংশীহারির অর্পণ পাহান। সে বংশীহারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে পড়াশুনো করে। তাঁর পিতা একজন দিনমজুর। সেও শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন দেখে বড়ো হয়ে পরিবারের অভাব দূর করবার। গতকাল ২রা ফেব্রূয়ারি, শনিবার হিন্দু সংহতির কোষাধক্ষ্য সাগর হালদারের তত্বাবধানে বালুরঘাটে এইরকম ৫০ জন ছেলেমেয়ের(যার মধ্যে ২৪ জন নবম শ্রেণীর এবং ২৬জন দশম শ্রেণীর ) হাতে হিন্দু সংহতির তরফ থেকে তাদের সমূহ প্রয়োজনীয় বইয়ের সেট তুলে দেওয়া হলো। এই অনুষ্ঠানে হিন্দু সংহতির সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য বলেন, ”আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি পৃথিবীর মধ্যে এক বিশেষ জায়গা অধিকার করে আছে। আজ যারা বয়স্ক, তারা ভারতের সভ্যতা, সংস্কৃতিকে উচ্চ তুলে ধরার কাজ আর করতে পারবে না। সেই দায়িত্ব আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ছাত্রসমাজকে নিতে হবে। সেই কাজে শক্তির দরকার। আর সেই শক্তি হলো শিক্ষা। আর সেই শক্তি গ্রহণের পথে যাতে কোনো বাধা না সৃষ্টি হয়, সেই কারণে হিন্দু সংহতি তোমাদের হাতে বই তুলে দিলো।” তিনি উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, ”তোমরা মন দিয়ে পড়াশুনো করো,শক্তি সঞ্চয় করো এবং ভারতের সংস্কৃতি, সভ্যতাকে বিশ্বে তুলে ধরার কাজ করো। সেই পথে বাধা এলে হিন্দু সংহতি তোমাদের পাশে সবসময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে।” এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হিন্দু সংহতির সহ সভাপতি শ্রী সমীর গুহরায়, সহ সম্পাদক শ্রী সুজিত মাইতি, বালুরঘাট ভারত সেবাশ্রম সংঘের শ্রী বিদুরানন্দজী মহারাজ, অনুপমানন্দজী মহারাজ, বালুরঘাটের বিখ্যাত আইনজীবী শ্রী বিদ্যুৎ কুমার রায়, দক্ষিণ দিনাজপুরের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব শ্রী রজত রায় এবং শ্রী প্রমিত লাহা।