মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে জাল নোট সহ ধৃত জঙ্গি রহিম শেখকে হাতে পেতে চায় ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জে নব্য জেএমবি’র জাল নোটের কারবারের হদিশ পেতেই রহিমকে পাওয়া প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে রাজ্য পুলিসের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এনআইএ জেনেছে, নব্য জেএমবি সদস্যরাই এখন বাংলাদেশে জাল নোট তৈরির একাধিক কারখানা খুলেছে। ভারতে জাল নোটের কারবারকে তারাই নিয়ন্ত্রণ করছে। এ রাজ্যে এই সংগঠনের হয়ে কাজ করা জঙ্গিদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র পাঠানোর ব্যবস্থা করছে নব্য জেএমবি-ই। অস্ত্র কেনার টাকা হাওলার মাধ্যমে এখান থেকেই তাদের কাছে যাচ্ছে। এই কাজের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিল রহিম শেখ। জেলা পুলিসের কর্তারা রহিম শেখকে জেরা করে এখনও পর্যন্ত যেসব তথ্য পেয়েছেন, তা রীতিমতো চাঞ্চল্যকর। এতদিন পর্যন্ত জেএমবি জঙ্গিরাই জাল নোটের কারবারকে নিয়ন্ত্রণ করত। কিন্তু এই সংগঠন ভেঙে যাওয়ার পর তার দখল নিয়েছে নব্য জেএমবি জঙ্গিরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জকে কেন্দ্র করেই গোটা কারবারটি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এখানে একাধিক ইউনিট গড়ে তুলেছে নব্য জেএমবি। যার দেখভাল করছে এই সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নকল নোট ছাপা হচ্ছে। আসল নোটের সঙ্গে জাল নোটের ফারাক কমিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে। অত্যন্ত ভালো মানের কাগজে জাল নোট ছাপা হচ্ছে। সেখানে কাজ করছে কয়েকশো যুবক। এই সংগঠনের সদস্যরাই সীমান্ত পেরিয়ে মালদহ ও মুর্শিদাবাদে তা নিয়ে আসছে। তারপর তা ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
চলতি বছরের আগস্ট মাসে মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে পুলিসের হাতে ধরা পড়ে রহিম শেখ। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ৮ লক্ষ টাকার জাল ভারতীয় নোট। তার এক সহযোগীও ধরা পড়ে। কিন্তু রহিম শেখ যে বাংলাদেশি, তা প্রথমে জানা যায়নি। জেরায় জানা যায়, সে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে জাল নোট সহ ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা করা হয় (কেস নম্বর ২১৬/২০১৮)। তদন্তে জানা যায়, রহিম সাধারণ জাল নোটের কারবারি নয়। সে নব্য জেএমবি’র সক্রিয় সদস্য। তার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে একাধিক জেহাদি সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢুকেছে। অস্ত্র ও বিস্ফোরক কারবারেও যুক্ত সে। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করে এনআইএ। তারা জানতে পারে, রহিম বড় মাথা। এরপরই তাকে হাতে পেতে তোড়জোড় শুরু হয়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্তারা রহিম শেখকে জেরা করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন।