কাশ্মীর রক্ষার্থে প্রয়োজনে সীমান্ত পেরিয়ে মারবে সেনাবাহিনী।গত ১৭ই মার্চ, শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের এহেন হুঁশিয়ারি পরেই নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করল পাকিস্তান। গতকাল ১৮ই মার্চ, রবিবার পুঞ্চ জেলার বালাকোট সেক্টরে পাক রেঞ্জার্সের মর্টার হামলায় প্রাণ হারালেন তিন ভাই সহ একই পরিবারের পাঁচ সদস্য। গুরুতর জখম হয়েছেন দুই বোন। শেল হামলার যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও।
পুঞ্চের নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে বালাকোটের দেবতা সার্গলুন গ্রামের দূরত্ব মেরেকেটে ৩-৪ কিমি। প্রতিদিনের মতো এদিনও এখানে সূর্য উঠেছিল। কিন্তু, জীবনযাত্রা শুরু হওয়ার আগেই সীমান্তের ওপার থেকে গ্রামে উড়ে আসতে শুরু করে ৮১, ১২০ মিলিমিটারের মর্টার। বিনা প্ররোচনায় এপারের বসতি লক্ষ্য করে গুলি ও শেল ছোঁড়ে পাক সেনাবাহিনী। যোগ্য জবাব দিয়েছেন ভারতীয় জওয়ানরাও। সকাল ৭টা ৪৫ মিনিট থেকে শুরু হওয়া এই গুলির লড়াই চলে প্রায় চার ঘণ্টা। পাকিস্তানের মর্টার হামলায় প্রাণ হারান একই পরিবারের পাঁচ সদস্য। তাঁরা হলেন, চৌধুরী মহম্মদ রমজান (৩৫), তাঁর স্ত্রী মালাইকা বাই (৩২) এবং তাঁদের তিন ছেলে আব্দুল রেহমান (১৪), মহম্মদ রিজওয়ান (১২) ও রেজ্জাক রমজান (৭)। গুরুতর জখম হয়েছেন তাঁদের দুই বোন নাসরিন কৌসের (১১) ও মাহরিন কৌসের (৫)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের আকাশপথে উড়িয়ে জম্মুর এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিসের ডিজি এস পি বৈদ্য ট্যুইট করে একথা জানিয়েছেন।
সেনাবাহিনীর জনসংযোগ আধিকারিক লেফটেন্যান্ট কর্নেল দেবেন্দর আনন্দ জানিয়েছেন, কোনওরকম প্ররোচনা ছাড়াই এদিন সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। এলোপাথাড়ি গুলি ও মর্টার হামলা চালায়। আমাদের জওয়ানরাও তার উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। সকাল ৭টা ৪৫ মিনিট থেকে শুরু হওয়া এই গুলির লড়াই চলে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে প্রায় চার কিমি দূরের গ্রামের পাক বাহিনীর এই মর্টার হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আনন্দ। তিনি বলেছেন, ঘটনাস্থলে কোনও সেনা শিবির বা জওয়ান মোতায়েন থাকা না সত্ত্বেও হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। গোলা-গুলিতে নিরীহ পাঁচ গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় পাকিস্তানের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীর মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।
ট্যুইটে তিনি লিখেছেন, ‘পুঞ্চের বালাকোটে নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তাঁদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’ পরিস্থিতির উন্নতিতে শান্তি জরুরি বলে জানিয়েছেন মেহবুবা মুফতি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘এক্ষেত্রে শান্তিই একমাত্র পথ। বাজপেয়িজি (প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী) লাহোর বাসযাত্রার মাধ্যমে এর সূচনা করেছিলেন। এবং পরে তা একই উদ্যোগে জারি রাখেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি। কিন্তু, পাঠানকোটে তাদের ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমরা যদি জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দাদের রক্ষা করতে চাই, তাহলে আমাদের সঠিক পথ বাছতে হবে।’