ভারতে ইসলামের বীজ সুদৃঢ়ভাবে প্রোথিত হয় ৭১২ সালে। সেই সাম্রাজ্যবাদী ইসলামের অশুভ ছায়া আমাদের এই বঙ্গদেশকে স্পর্শ্ব করলো তার ৫০০ বছর পরে, অর্থাত ১২০৬ সালে। তার পর থেকে আজ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে চলেছে সেই অসুর শক্তির সাথে সংগ্রাম। রাজশাহী-দিনাজপুরের রাজা গণেশ, বিক্রমপুরের চাঁদ রায় এবং কেদার রায়, যশোরের প্রতাপাদিত্য, বিষ্ণুপুরের বীর হাম্বীর, বেড়াচাঁপার রাজা চন্দ্রকেতু ও তার দুই সেনাপতি হামা আর দামা, বালিয়া বাসন্তীর বাগ্দী রাজাদের মত অসংখ্য বাঙালি বীর এই অসুর সাম্রাজ্যবাদের সামনে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। আজও সেই লড়াইয়ে বাঙালি পিছিয়ে নেই।
এই সংগ্রাম কেন?
১৪০০ বছর আগে জন্ম নেওয়া ইসলাম নামক একটি মতবাদ পৃথিবীকে দুভাগে ভাগ করেছে। শুধু ভাগ করেই শেষ নয়, সেই মতবাদে যারা বিশ্বাস করেন না, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই অবিশ্বাসীদেরকে তীব্র ঘৃণা করতে শিখিয়েছে। তাদের বিশ্বাস, সংস্কৃতি, ধর্ম – সবকিছু ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছে। আমরা সারা পৃথিবীর মানুষকে বসুধৈব কুটুম্বকম মনে করি, অথচ তারা আমাদেরকে কাফের-মুশরিক-বুতপরস্ত বলে ঘৃণা করে। তারা আমাদের এই মাটিকে দারুল ইসলামে পরিণত করতে চায়। তারা বাংলার বারো মাসে তেরো পার্বণকে ধ্বংস করে আমাদের উপরে আরবের মরু সংস্কৃতিকে জোর করে চাপিয়ে দিতে চায়। ওরা পারস্য, মিশর, আফগানিস্তান, পাকিস্তানের পাঞ্জাব, বালুচিস্তান, সিন্ধ – সব জায়গার মূল সভ্যতাকে এবং তাদের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করেছে। আমাদের বাংলার তিনভাগের দুভাগ মাটি ছিনিয়ে নিয়ে বাংলাদেশ করেছে। সেখান থেকে বাঙালিকে তাড়িয়েছে, গণহত্যা করেছে, বাঙালি মেয়েদের নৃশংসভাবে ধর্ষণ করেছে। বাঙালির দুর্গাঠাকুরের মূর্তি ভেঙেছে, কালীঠাকুরের মূর্তি ভেঙেছে, রামকৃষ্ণ মিশনে হামলা করেছে। সতসঙ্গ-ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ-রামঠাকুরের অশ্রমসহ কোনও বাঙালি প্রতিষ্ঠানই এই জেহাদী আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পায়নি। শুধু ওপার বাংলা কেন, এপারের দেগঙ্গা, নলিয়াখালি, ধানতলা, ধুলাগড়, বাদুড়িয়া-বসিরহাট, তেহট্ট, কালিয়াচক, চোপড়া, রায়গঞ্জ – সর্বত্র কি আমরা একই চিত্র দেখতে পাই নি! সুতরাং ইতিহাস বলছে, আমরা শান্তি চাইলেই শান্তি আসবে না। কারণ অশান্তির বীজ তাদের মতবাদের মধ্যেই নিহিত আছে। আমাদের চাওয়া অথবা না চাওয়ার কোনও মূল্য নেই।
১৯৪৭ এ এই ভারতের মাটি গেছে – এই সত্যের চেয়েও বড় সত্য হল আমাদের এই বাংলার তিনভাগের দুভাগ মাটি চলে গেছে। হিন্দু উদ্বাস্তু হয়েছে – কিন্তু তার চাইতে বড় সত্য হল, বাঙালি উদ্বাস্তু হয়েছে, বাঙালি নিধনযজ্ঞ হয়েছে, বাঙালি মা-বোনদের ধর্ষণ করা হয়েছে। ওপারে বাঙালির শিবরাত্রি, চড়কপূজা, নবান্ন, পৌষ পার্বন, কালীপূজা, দুর্গাপূজা, সরস্বতী পূজা, অরন্ধন, রান্নাপূজো, রাসমেলা, নাম সংকীর্তনের সংস্কৃতি ধ্বংস হয়েছে। আর এপারে বাঙালির দুর্গাপূজা রূপান্তরিত হয়েছে শারদোৎসবে, রবিঠাকুর হয়েছেন বুর্জোয়া কবি, নেতাজী হয়েছেন তোজোর কুকুর। বাঙালির মেরুদন্ড ভাঙার এই কাজ ওপারে করে চলেছে জেহাদী মুসলমানেরা, আর এপারে করে চলেছে তাদের দোসর বাংলার সেকু-মাকুরা।
উপায় কি?
এই পরিস্থিতিতে আমাদের সামনে তিনটে অপশন আছে – ১)বাংলার মাটি ছেড়ে পালাও, ২) আত্মসমর্পণ করো আর মরু সংস্কৃতিকে কবুল করো, ৩) ইসলামিক জেহাদের বিরুদ্ধে অস্তিত্বরক্ষার লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ো। এই লড়াই মারাঠা লড়েছে, রাজপুতানা লড়েছে, বিজয়নগর লড়েছে, পাঞ্জাব লড়েছে, বুন্দেলখন্ড লড়েছে। তারা সবাই নিজেদের দমে লড়েছে এবং জিতেছে। সারা দেশ কবে একতাবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে নামবে-তারজন্য কেউই অপেক্ষা করে বসে থাকেনি। এই লড়াইয়ে বাঙালিও পিছিয়ে থাকেনি, তার উল্লেখ আমি আগেই করেছি। আমরা, বাঙালিরা সেই সংগ্রামী যোদ্ধাদের উত্তরসূরী। আজ দ্বিতীয় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ সমুপস্থিত। গোটা বিশ্বে আজ ইসলামিক উম্মা একদিকে এবং সভ্য মানবসমাজ অন্যদিকে। এই কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে বাঙালির দায়িত্ব বাংলাকে এবং বাঙালিয়তাকে রক্ষা করা। এই বাংলাই আজ আমাদের ওয়ার ফ্রন্ট বা যুদ্ধক্ষেত্র।
আমরা কি প্রস্তুত?