ভারতীয় সেনা শিবিরে হামলা চালাল জঙ্গিরা। গত ১০ই ফেব্রুয়ারী, শনিবার ভোরে জম্মুর সুঞ্জোয়ান সেনা ছাউনিতে অতর্কিতে হামলা চালায় জয়েশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি সংগঠনের পাঁচজন সদস্য। এই হামলায় শহিদ হয়েছেন দু’জন জুনিয়র কমিশনড অফিসার (জেসিও)। সেনার তরফে জানা গিয়েছে, শহিদ দুই অফিসার হলেন সুবেদার মদনলাল চৌধুরী এবং সুবেদার মহম্মদ আসরফ মীর। হামলায় জখম হয়েছেন আরও চারজন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কর্নেল পদমর্যাদার এক আধিকারিক, হাবিলদার আব্দুল হামিদ, ল্যান্সনায়েক বাহাদুর সিং এবং সুবেদার চৌধুরীর মেয়েও।
ডিজিপি এস পি বৈদ জানিয়েছেন, সুঞ্জোয়ান সেনা শিবিরের যেদিকে সেনা জওয়ানদের আবাসন রয়েছে, সেখান দিয়েই ভিতরে ঢোকে জঙ্গিরা। আইজিপি এসডি সিং জামওয়াল জানান, ভোর পাঁচটা নাগাদ সেনা শিবিরের ভিতরে ঢুকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনা জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। পাল্টা জবাব দেয় সেনাবাহিনীও। লাগাতার গুলির মুখে পড়ে আবাসনের একটি প্রান্তে কোণঠাসা হয়ে পড়ে জঙ্গিরা। হামলার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ এবং নিরাপত্তাবাহিনী। হাজির হয় সেনা জওয়ানের বিশেষ বাহিনী এবং স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের (এসওজি) সদস্যরা। ঘিরে ফেলা হয় গোটা এলাকা। এরপরেই জঙ্গিদের খোঁজে শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি। জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় অনেকগুলি স্কুল থাকায় নিরাপত্তার খাতিরে স্কুলগুলিকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। সুঞ্জোয়ান সেনা ছাউনির চারপাশ জনবসতিপূর্ণ হওয়ায় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে সেনা সূত্রে খবর। তল্লাশির সময়ে যে কোনও সময় ফের গুলির লড়াই শুরু হতে পারে, এমন পরিস্থিতির জন্যও জওয়ানদের তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছে সেনাবাহিনী। জম্মুজুড়ে বিশেষ সতর্কতা জারি করার পাশাপাশি অন্যান্য সেনাছাউনিগুলিকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জঙ্গি হামলায় দু’জন সেনা আধিকারিকের শহিদ হওয়ার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করলেও হামলার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি এখনও সেনা অভিযান চলছে। আমার মনে হয়, যতক্ষণ না সেনা অভিযান শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই বিষয়ে আমার কোনও মন্তব্য করা উচিত হবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের সেনা জওয়ান এবং অন্যান্য নিরাপত্তাবাহিনী যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গেই তাদের কাজ করছে। তারা কোনও পরিস্থিতিতেই লজ্জায় ভারতীয়দের মাথা কাটা যেতে দেবে না।’’ জঙ্গি হামলার বিষয়টি নিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ প্রধানের সঙ্গেও আলোচনা করেন রাজনাথ সিং।