বীরভূম জেলার মল্লারপুর থানার অন্তর্গত বীরচন্দ্রপুরে সাপ্তাহিক বুধবারে ও শনিবারে হাট বসে। ওই হাটে হিন্দু ও মুসলিম দুই ধর্মের মানুষজন সব্জি ব্যবসা করেন। গত ৩১শে জানুয়ারী, বুধবার নিয়ম মেনে হাট বসে। ঐদিন হাটে একটি গরু এক মুসলমান সবজিওয়ালার একটি বাঁধাকপি খেয়ে নেয়। তখন ওই মুসলমান সবজিওয়ালা গরুটিকে লাথি মারে। এই ঘটনা দেখে হাটে থাকা অন্যান্য হিন্দু সব্জি দোকানদাররা প্রতিবাদ করে। শীঘ্রই ওখানে হিন্দু ও মুসলিম ব্যবসায়ীদের মধ্যে বচসা শুরু হয় এবং পরে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে এই বিষয়টি মীমাংসার জন্যে গত রবিবার, ৩রা ফেব্রুয়ারী একটি আলোচনাসভা ডাকা হয়। কিন্তু তার আগের দিন হাটে আলুবস্তা সরানো নিয়ে এক হিন্দু ব্যবসায়ী নিমাই ঘোষকে প্রচুর মারধর করে পাশের বিষিয়া ও জামুনি এলাকার মুসলিমরা। লোহার ওজন বাটখারা দিয়ে শান্তি ঘোষ নামের একজন ব্যবসায়ীর মাথায় আঘাত করে মুসলিমরা। তার মাথা ফেটে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন হাটমালিক জগন্নাথ ঘোষ। কিন্তু তাকেও মুসলমানরা প্রচুর মারধর করে। এই ঘটনার খবর পেয়ে পাশের ঘোষপাড়া থেকে প্রচুর হিন্দু বীরচন্দ্রপুর হাটে উপস্থিত হয়। তখন দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। হিন্দুদের মারে অনেক মুসলমান আহত হয়। খবর পেয়ে মল্লারপুর থানার পুলিশ আসে এবং হিন্দুদের হটানোর চেষ্টা করে। সংঘর্ষের সময় উপস্থিত এক হিন্দু হিন্দু সংহতির প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন যে হিন্দুদের মারে যখন মুসলমানরা দিশেহারা হয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলো, তখন হিন্দুদের হটানোর জন্যে পুলিশ হিন্দুদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। যদিও সেই গুলি কোনো হিন্দুর গায়ে লাগেনি। তবে উত্তেজনা থাকায় বর্তমানে এলাকায় বিশালসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আহত শান্তি ঘোষের আঘাত খুব মারাত্মক হওয়ায় প্রথমে তাকে রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বর্ধমান জেলা হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসকেরা। বর্তমানে শান্তি ঘোষ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তবে স্থানীয় হিন্দুরা হিন্দু সংহতির প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন যে বীরচন্দ্রপুরের এই হাট খুব লাভজনক হাট। তাই এই হাট দখল করার জন্যে মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রতিবারের মতো এইবারও হিন্দুর শক্তির কাছে তাদের পরাজিত হতে হয়েছে।