অভিনব কায়দায় দিনের পর দিন মানুষকে প্রতারিত করে এটিএম থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গত ২রা ফেব্রুয়ারী, শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট থানার পুলিশ এক কলেজ পড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ছাত্রের নাম রফিকুল মণ্ডল। তার বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি ব্লকের খারুনে। সে মালদহের একটি বেসরকারি বিএড কলেজের ছাত্র। গত এক মাসে এক লক্ষেরও বেশি টাকা সে বিভিন্ন সময়ে হাতিয়ে নিয়েছে।
বালুরঘাট থানার আইসি সঞ্জয় ঘোষ বলেন, চৌমাথা মোড়ের এটিএম থেকে টাকা না মেলার খবর লিখিতভাবে আমাদের কাছে আগেও এসেছে। শুক্রবার নির্দিষ্ট একটি অভিযোগের ভিত্তিতে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পতিরাম চৌমাথা মোড়ের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে এদিন কুমারগঞ্জ ব্লকের বেলতারার বাসিন্দা প্রীতি প্রামাণিক টাকা তুলতে যান। নতুন কার্ড হাতে পেয়ে টাকা তুলতে না পারায় তিনি এটিএমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রফিকুলের সাহায্য চান। একাধিকবার চেষ্টা করে ধৃত ছাত্র মহিলাকে জানিয়ে দেয় এটিএমে টাকা নেই। কিন্তু প্রীতিদেবী বাড়ি গিয়ে দেখতে পান তাঁর এটিএম কার্ডটি বদল করা হয়েছে এবং তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৩০ হাজার টাকা তোলার একটি ম্যাসেজ মোবাইল ফোনে এসেছে। দেরি না করে তিনি পতিরাম পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে এটিএমের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে। ছবিতে দেখা যায় মহিলাকে সাহায্য করার নামে ছেলেটি এটিএম কার্ডের পিন নম্বর দেখে নেয় এবং কার্ডটি বদল করে দেয়। পুলিশ এটিএম চত্বরে গিয়ে ওই যুবকের সন্ধান পায় এবং সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ছ’মাসে ছাত্রটি একই কায়দায় ১০ জনেরও বেশি গ্রাহকের এটিএম কার্ড বদলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না জানতে পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা জানিয়েছেন, কোনও ব্যক্তি এটিএম থেকে টাকা তুলতে না পারলে ওই যুবক সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসত। তারপরেই শুরু হত তার কারসাজি। পড়াশুনার খাতিরে সে মালদহতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত। তবে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন এটিএমে হাজির হয়ে গ্রাহকদের সাহায্য করার নামে প্রতারিত করতো। এদিন পুলিশ যুবকের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে মহিলার হাতে তা তুলে দেয়।